দ্রুততম কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছে চীন

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছে একদল চীনা গবেষক। এটা বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ১০০ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি দ্রুত কাজ করতে সক্ষম।

চীনের হেফাইয়ের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির একটি দল নতুন এই কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির দাবি করেছে। কম্পিউটারটির নাম তাঁরা দিয়েছেন জিউজাং। গুগলের কোয়ান্টাম সাইকামোরের চেয়ে এটা ১০ বিলিয়ন গুণ দ্রুত কাজ করবে। ৩ ডিসেম্বর সায়েন্স জার্নাল-এ এ বিষয়ে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। চীনা দলটির দাবি সত্যি হলে, জিউজাং হতে যাচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় কোয়ান্টাম কম্পিউটার।

ভারতের এনডিটিভি জানিয়েছে, চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। দেশটির ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি ফর কোয়ান্টাম ইনফরমেশন সায়েন্সে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। বিখ্যাত সায়েন্স পোর্টাল লাইভ সায়েন্স জানায়, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে দেশটি এখন সামনের সারিতে অবস্থান করছে। চীনের গবেষকেরা কোয়ান্টাম মেকানিকস ব্যবহার করে এনকোড করা ডেটা বহু দূরে পাঠাতে সক্ষম।

এর আগে, ২০১৯ সালে টেক জায়ান্ট গুগল বিশ্বের প্রথম কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির দাবি করে। তারা এও দাবি করে, গণনার ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারকেও ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আইবিএম গুগলের সেই দাবিকে বিতর্কিত বলে মন্তব্য করে সে সময়।

কোয়ান্টাম কম্পিউটার কী

কোয়ান্টাম কম্পিউটারে নির্দিষ্ট কিছু কাজে গতানুগতিক কম্পিউটারে করা সম্ভব নয়। এসব জটিল গাণিতিক কাজ করার জন্য দরকার অবিশ্বাস্য গতি। গতানুগতিক সুপার কম্পিউটারে এই গতি অর্জন সম্ভব নয়। কোয়ান্টাম তত্ত্ব কাজে লাগিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সাহায্যে এসব জটিল কাজ সহজেই করে ফেলা সম্ভব। সাধারণ কম্পিউটার চলে বাইনারি বিট পদ্ধতিতে, শুধু ০ আর ১ ব্যবহার করে। কোয়ান্টাম কম্পিউটারে বাইনারি বিটের বদলে ব্যবহার করা হয় কিউবিট। এ পদ্ধতিতে কম্পিউটার একটি সমস্যার একই সঙ্গে বহু সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করতে সক্ষম। সেখান থেকে সঠিক হিসাবটা দিতে তাই দেরি হয় না।

চীনের তৈরি কোয়ান্টাম কম্পিউটার জিউজাং তার সব হিসাব-নিকাশ বা গণনা করে অপটিক্যাল সার্কিট ব্যবহার করে। অন্যদিকে গুগলের কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাইকোমারে ব্যবহৃত হয় সুপারকন্ডাকটর বা অতিপরিবাহী চিপ। এটা সাধারণত গতানুগতিক কম্পিউটারের কাছাকাছি একটা ব্যবস্থা।

জিউজাংকে পরীক্ষার জন্য গবেষকরা গাউসিয়ান বোসন স্যাম্পলিং (জিবিএস) পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এ পদ্ধতিতে কম্পিউটার আলো ব্যবহার করে একটি জটিল সার্কিটের আউটপুট গণনা করে। কম্পিউটারের সাফল্য পরিমাপ করা হয় শনাক্তকৃত ফোটন (আলোর কণাকে ফোটন বলে) সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। জিউজাং নিজেই একটি অপটিক্যাল সার্কিট। এক-একটি হিসাবে সর্বাধিক ৭৬টি ফোটন শনাক্ত করতে পারে জিউজাং। তবে এখন পর্যন্ত এটি প্রতিটা হিসাবে গড়ে ৪৩টি ফোটন শনাক্ত করেছে। প্রতিটি কাজের জন্য এটি সময় নেয় ২০০ সেকেন্ড। একই ধরনের কাজের জন্য চীনের সবচেয়ে দ্রুতগতির সুপার কম্পিউটার তাইহুলাইটের সময় লাগবে ২৫০ কোটি বছর।

চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার মতে, সাধারণ কাজে ব্যবহার উপযোগী কোয়ান্টাম কম্পিউটার এখনো চীনের হাতে আসেনি। তবে জিউজাং এ পথে একটা বড় অগ্রগতি, এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

At HAMKO Future Tech Academy We are dedicated to shaping the future of technology by equipping students with the skills and knowledge needed to excel in the dynamic world of industrial attachment and freelancing programsHAMKO Future Tech Academy

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here