কম্পিউটার কি-বোর্ডে লেখা বা টাইপ করা অনেকের কাছে ডালভাতের মতো। চোখ বন্ধ করে টাইপও করেন অনেকে। তবে অনেকে হয়তো স্ক্রল লক বা মেনু বোতামের কাজ কী, তা বলতে পারবেন না। কোয়ার্টি কি-বোর্ডের বর্ণমালা, সংখ্যাসূচক ও বিরামচিহ্নের বোতামগুলো হয়তো অধিকাংশ ব্যবহারকারীর কাছে পরিচিত। তারপরও কিছু অপ্রয়োজনীয় বোতাম এবং ব্যবহার হয় না এমন গোপন কিছু শর্টকাট বোতাম আছে, যেগুলো ব্যবহারকারীর খুব একটা চোখে পড়ে না। কিন্তু জানা থাকলে শর্টকাটগুলো কারও কাছে লুকানো রত্ন হিসেবে ধরা দেবে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন কি-বোর্ডের তেমন সব বোতামের একটি তালিকা করেছে। দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকার বোতাম ও সেগুলোর কাজ কী।
স্ক্রল লক
স্ক্রল লক সাধারণত মাইক্রোসফট এক্সেলে ব্যবহৃত হয়। স্ক্রল লক নিষ্ক্রিয় থাকলে অ্যারো (তির) বোতামগুলো একটি পয়েন্টে ওপরে বা নিচে স্ক্রল করে সরানো যায়। স্ক্রল লক চালু থাকলে অ্যারোকে পুরো এক্সেল শিটজুড়ে নড়াচড়া করা যায়।
পজ [ব্রেক] কি
Pause/Break বোতামও খুব একটা ব্যবহার হয় না। এ বোতাম চাপলে পর্দায় তেমন কোনো পরিবর্তনও চোখে পড়ে না। চলমান কোনো প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এটি বিরতি দিতে পারে না। তবে কন্ট্রোল বোতামের সঙ্গে মিলে এটি কিছু চলমান প্রোগ্রাম বন্ধ করতে পারে।
টিল্ট কি
এই বোতাম হয়তো অনেক ব্যবহারকারীর চোখেই পড়েই না। বোতামটি শিফট ধরে চাপলে যে চিহ্ন (~) আসে, তা মূলত বুলিয়ান বীজগণিতের লজিক নেগেশনে ব্যবহৃত হয়। আর শিফট ছাড়া চাপলে যে চিহ্ন (`) আসে, তা সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামাররা একটি টাইপোগ্রাফিক্যাল চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করেন। মোটকথা গণিতসংশ্লিষ্ট পেশার না হলে এই বোতাম তেমন কাজে লাগে না।
ইনসার্ট
ওয়েবসাইট দেখার সময় ইনসার্ট বোতামের দৃশ্যত কোনো প্রভাব নেই। তবে টাইপ করার সময় বিভিন্ন লেখার সেটিংসের মধ্যে টোগলিংয়ে এটি ব্যবহৃত হয়।
মেনু
এই বোতাম চাপলে যেকোনো অ্যাপ্লিকেশনের মেনু অপশনগুলো দেখা যায়। সাধারণত যাঁরা ল্যাপটপের টাচপ্যাড ব্যবহার করতে চান না, তাঁদের জন্য এটি খুব উপকারী। কারণ, অ্যারো বোতামের সঙ্গে একত্রে এর মাধ্যমে এক মেনু অপশন থেকে অন্যটিতে যাওয়া যায়।
এন্ড
এই বোতামও প্রায় অব্যবহৃত থাকে। প্রাথমিকভাবে টাইপ করার সময় এটি কাজে লাগে। বোতামটি চাপলে কারসর তাৎক্ষণিকভাবে একটি লেখার শেষ লাইনে চলে যায়।
ফাংশন কি
অনেক ব্যবহারকারীই হয়তো ফাংশন বোতামগুলোর কাজ সম্পর্কে অবগত আছেন। যাঁরা জানেন না, তাঁরা একনজর চোখ বুলাতে পারেন।
F1 : উইন্ডোজের সব জায়গায় হেল্প মেনু হিসেবে কাজ করে।
F2: যেকোনো ফাইল, ফোল্ডারের নাম দ্রুত পরিবর্তনের (রিনেম) ক্ষেত্রে এই বোতাম ব্যবহার করা হয়।
F3: কম্পিউটারে কাজ করার সময় কোনো তথ্য খুঁজে পেতে F3 চাপতে হবে। বিশেষ করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কাজ করার সময় F3 চেপে নির্দিষ্ট পেজে যেতে হয়।
F4: উইন্ডোজে চালু থাকা প্রোগ্রাম—তা ইন্টারনেট ব্রাউজার বা মাইক্রোসফটের যেকোনো প্রোগ্রাম হোক—মাউস ছাড়া বন্ধ করতে F4 চাপতে হয়। সে ক্ষেত্রে Alt+F4 চাপতে হয়।
F5: চালু থাকা উইন্ডোজ রিফ্রেশের জন্য এ বোতাম ব্যবহৃত হয়।
F6 ও F10: উইন্ডোজের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে কারসর সরানোর ক্ষেত্রে এই বোতাম ব্যবহার হয়।
ওয়ার্ডে CTRL+F6 বোতাম চাপলে চালু থাকা সব ডকুমেন্টস পর্যায়ক্রমে দেখাবে।
একইভাবে মাইক্রোসফট ডকুমেন্টে বেশ কয়েকটি অপশন হাইলাইট করতে F10 চাপতে হয়।
F7, F8, ও F9: উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ারে কোনো কিছু দেখার ক্ষেত্রে ভলিউম বাড়ানো-কমানো ও শব্দহীন (মিউট) করতে এই তিনটি বোতাম ব্যবহৃত হয়। F8 চেপে ভলিউম কমানো, F9-এ ভলিউম বাড়ানো এবং F7 চেপে ভলিউম মিউট করা হয়। এ ছাড়া মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বানান ও ব্যাকরণগত ভুল ঠিক করতে F7 ব্যবহৃত হয়।
F11: যেকোনো ইন্টারনেট ওয়েব ব্রাউজারে খোলা অবস্থায় F11 চাপলে সেটি পর্দাজুড়ে (ফুলস্ক্রিন) দেখাবে।
F12: মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে ফাইল সংরক্ষণ করতে F12 চাপলে সেভ অ্যাজ ডায়ালগ বক্স চালু হয়।
সূত্র: ডেইলি মেইল