২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সফটওয়্যার ও কাস্টমাইজেশন সেবার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এতে এই সেবার মূল্য বাড়তে পারে। বিদেশি কিছু সফটওয়্যার আমদানিতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক থাকলেও অধিকাংশ সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেশি সফটওয়্যারশিল্পকে গুরুত্ব দিতে সফটওয়্যার আমদানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের সঙ্গে ১৫ শতাংশ মূসক বা ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, দেশে সফটওয়্যার তৈরি করতে যে সফটওয়্যারগুলোর দরকার হয়, সেগুলোকে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের বাইরে রাখা হয়েছে। এর ফলে দেশে সফটওয়্যার তৈরির খরচ বাড়বে। সরকার বলছে, দেশি সফটওয়্যার খাতকে উৎসাহিত করতেই আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।
রাসেল টি আহমেদ আরও বলেন, এবারের বাজেটে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস ও নিরাপত্তা সফটওয়্যারের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এসব সফটওয়্যার বা টুলস দেশে তৈরি হয় না। অপারেটিং সিস্টেম ও নিরাপত্তা সফটওয়্যার সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডেটাবেজ এবং ডেভেলপমেন্ট টুলস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার বা অ্যাপ তৈরি করা হয়। এর ফলে দেশে বসে সফটওয়্যার বানাতে খরচ বাড়বে বহুগুণ। তাই দামও বেড়ে যাবে। সফটওয়্যারের উৎপাদন ও কাস্টমাইজেশন পর্যায়ে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই হারে শুল্ক এবং কর বৃদ্ধি পেলে দেশে সফটওয়্যার উৎপাদনসহ সব পর্যায়ের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা ব্যবহারকারীদের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশি সফটওয়্যারের খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। আর তাই দেশে সফটওয়্যার তৈরি করতে যে সফটওয়্যার বা টুল দরকার হয়, সেগুলোর আমদানি শুল্ক এবং কর প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
প্রস্তাবিত বাজেটে সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্কের প্রস্তাবের বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) সভাপতি ও বেসিসের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘বাজেটে প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে এটা ভালো দিক। তবে কোন খাতে কতটুকু ব্যয় হবে, সেটা নির্দিষ্ট করে দিলে আরও ভালো হতো। সফটওয়্যার খাতে বাজেটের কত শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটা নির্দিষ্ট থাকা উচিত। কারণ, সফটওয়্যার রপ্তানি করে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সুযোগ রয়েছে। তাই সফটওয়্যার খাতে বরাদ্দ বেশি হওয়া উচিত ছিল। আমরা সরকারকে প্রতিষ্ঠান ডিজিটালাইজ করার জন্য প্রণোদনা দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।’