পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট পাঠিয়ে সারা বিশ্বে মোবাইল ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে আলোচিত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক। বর্তমানে মহাকাশে স্টারলিংকের সাড়ে ছয় হাজারের মতো স্যাটেলাইট রয়েছে। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে থাকা এসব স্যাটেলাইটের কারণে ঠিকমতো মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমির তথ্যমতে, নতুন প্রজন্মের স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলো সারা বিশ্বে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিলেও এগুলো রেডিও টেলিস্কোপ ও জ্যোতির্বিদ্যা–সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনের সময় বিভ্রান্ত হচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে জ্যোতির্বিদ জেসিকা ডেম্পসি বলেন, এমন কৃত্রিম উপগ্রহ যত বেশি পাঠানো হচ্ছে, ততই আমরা আকাশ কম দেখতে পাচ্ছি। আমরা বর্তমানে কয়েক লাখ আলোকবর্ষ দূরের কিছু প্রাচীন ছায়াপথ পর্যবেক্ষণ করছি। এসব ক্ষেত্রে স্যাটেলাইটগুলোর রেডিয়েশন প্রভাব ফেলছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের ভি২ স্যাটেলাইট প্রথম প্রজন্মের তুলনায় ৩২ গুণ বেশি শক্তিশালী। এসব স্যাটেলাইট ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়নের নির্ধারিত মাত্রার চেয়েও বেশি বিকিরণ করছে।
ছায়াপথ বা গ্রহসহ মহাকাশের অনেক বস্তু ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমে আলো নির্গত করে। এসব বিকিরণের তরঙ্গ খালি চোখে দেখা না গেলেও রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়। কিন্তু স্টারলিংকের পাঠানো হাজার হাজার স্যাটেলাইটের কারণে তরঙ্গগুলো ঠিকমতো শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
স্যাটেলাইটের কারণে আলোর দূষণ নিয়েও চিন্তিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এসব স্যাটেলাইট অপটিক্যাল টেলিস্কোপের কাজের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করছে। বৈজ্ঞানিক কাজের বাধা কমাতে মহাকাশে স্যাটেলাইটগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মান নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সূত্র: বিবিসি