তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাত থেকে অর্জিত আয়ে আগামী ২০৩১ সাল পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)। এ ছাড়া কনটাক্ট সেন্টারের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ওপর আমদানি শুল্ক কমাতে বলেছে সংগঠনটি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের আইসিটি খাতের প্রত্যাশা নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজনের পঞ্চম পর্বে আজ থাকছে বাজেটে বাক্কোর প্রত্যাশার কথা। বাজেটে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং খাতের প্রস্তাবগুলো লিখেছেন বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ
বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল যুগ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, ২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আগামী বাজেটে বাক্কোর পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাব আছে।
প্রস্তাব ১. তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবেদনের এক মাসের মধ্যে সনদ প্রদান করা এবং তিন বছর মেয়াদি ট্যাক্স এক্সেম্পশন সনদ দেওয়া হোক।
প্রস্তাব ২. তথ্যপ্রযুক্তি সেবা (আইটিইএস) সংশ্লিষ্ট ব্যবসা খাতের অর্জিত আয়করমুক্ত থাকার মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন থেকে বাড়িয়ে ২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হোক।
প্রস্তাব ৩. আইটিইএসের ওপর থাকা ৫ শতাংশ হারে উৎসে মূল্য সংযোজন কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
প্রস্তাব ৪. উৎসে কর্তনকারীর নিকট প্রদেয় কর পরিশোধ না করেও সেবা প্রদান করার সুযোগ এবং পরবর্তী সময়ে ওই উৎসে কর্তিত মূসকের বিপরীতে প্রদান করা চালান/সার্টিফিকেট (মূসক ৬.৩) সংগ্রহ করে যেকোনো সময় ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে হ্রাসকারী সমন্বয় হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হোক।
প্রস্তাব ৫. তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটিইএস শিল্পের বলিষ্ঠ অবস্থান তৈরিতে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান আইন শিথিল করা হোক। তথ্যপ্রযুক্তিশিল্পের জন্য প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে মূল্য সংযোজন কর এবং উৎসে কর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নির্ধারিত হারে করা হোক।
প্রস্তাব ৬. আইটিইএস শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য বিদ্যমান আইন শিথিল করা হোক।
প্রস্তাব ৭. তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটিইএস–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কম্পিউটার ও কম্পিউটার–সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে উৎসে মূল্য সংযোজন কর এবং উৎসে কর থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হোক।
প্রস্তাব ৮. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪, সেকশন কোড–৬৪ বি (২) উল্লিখিত আইনের আওতায় কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরাসরি পরিবহন আমদানি করার অনুমতি প্রদান এবং উৎসে মূল্য সংযোজন কর, উৎসে কর শিথিল করা হোক।
প্রস্তাব ৯. অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্স আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বর্তমানে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে এবং এই খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিদ্যমান আইটিইএস সংজ্ঞায় এই বিপিও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
প্রস্তাব ১০. ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।
প্রস্তাব ১১. এমএফসি প্রিন্টার মূলত প্রিন্ট এবং স্ক্যানিংয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। ফটোকপিয়ারের অপশন থাকায় কার্ট্রিজ আমদানির ক্ষেত্রে মূসক প্রত্যাহার করে শুল্কহার (টিটিআই) ১০.২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
প্রস্তাব ১২. ২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত মনিটরের ক্ষেত্রে মূসক ও অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে নতুন হার নির্ধারণ করা প্রয়োজন। আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশের (এআইটি) বদলে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন।