বারকোড স্ক্যানারের প্রযুক্তি
সুপারশপগুলোতে কেনাকাটা শেষে লাইনে দাড়ালেন। একে একে নিজের কেনা জিনিসগুলো তুলে দিচ্ছেন কাউন্টারে। কাউন্টারে থাকা শপকিপার আপনার পণ্যগুলোর গায়ে ঠেঁসে ধরছে স্ক্যানার। চিপসের প্যাকেটে চেপে ধরতেই ‘বিপ’ করে একটা শব্দ। সাথে সাথে পাশের কম্পিউটারের মনিটরে থাকা স্ক্রিনে ভেসে ওঠে সব তথ্য। কোন পণ্য, কত দাম, কত ভ্যাট এগুলো নিয়ে যেমন কম্পিউটার আপনার রশিদ বানাচ্ছে, তেমনি সুপারশপের পণ্যের পরিমাণের আপডেটও রাখছে।
দেশে–বিদেশে অধিকাংশ সুপারশপেই এখন ব্যবহার করা হচ্ছে এই বারকোড স্ক্যানার। বারকোডগুলো একটু ছেড়া, ফাঁটা বা মোচড়ানো হলেও বেশ সহজেও পণ্যের তথ্য উদ্ধার করতে পারে এই স্ক্যানারগুলো। বারকোড স্ক্যানারগুলোর কাজ ভেদে আলাদা আলাদা রকমফের থাকলেও সবগুলোর পেছনের প্রযুক্তি কিন্তু প্রায় একই।
বারকোড স্ক্যানারগুলো তিনধাপে কাজ করে। ইলুমিন্যাশন সিস্টেম, সেন্সর আর ডিকোডার। একটি বিশেষ উৎস থেকে আলো বারকোডে উপরে ফেলা হয়। যেখান থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে স্ক্যানারে ফেরত যায় এবং সেন্সর সেগুলো বুঝতে পারে।
লেজার স্ক্যানারগুলো এক বিশেষ মাত্রার আলোক বিম ছোড়ে। যেগুলো বারকোড থেকে প্রতিফলিত হয়ে আয়নার সাহায্যে আবার বারকোডে গিয়ে পরে। এ কারণে স্ক্যানার ধরার সাথে সাথে আলোর ঝলক তৈরি হয়। এরপর পন্যের বারকোডে থাকা ফাঁকা স্থানের থেকে আসা আলোর আরেকটি আয়নায় পড়ে। যেখান থেকে সেন্সর প্রয়োজনীয় ডিজিটাল ও অ্যানালগ তথ্য তৈরি করতে পারে। যা পরবর্তীতে কম্পিউটারের স্বয়ংক্রিয় ডেটাবেজে যুক্ত হয়ে যায়।
বারকোডের খুঁটিনাটি
সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় ইউনিভার্সাল প্রোডাক্ট কোড (ইউপিসি) ধরণের বারকোডগুলো। কালো আরা সাদা মিলিয়ে ৯৫টি কলামের এই বারকোড সবচেয়ে নিরাপদ। স্ক্যানারে এই বারকোড স্ক্যান করা হলে ১৫টি সেকশনে আলাদা আলাদাভাবে কম্পিউটার ৯৫টি সংখ্যা তৈরি করে। প্রথমে, শেষে আর মাঝে কিছু গ্রুপ রাখা হয় যেন কম্পিউটার বুঝতে পারে যে বারকোডটি বাম থেকে ডানে কিংবা উপর–নিচ করে স্ক্যানারে রিড করানো হয়েছে কিনা।
বারকোডের একেবারে বামে থাকা নম্বরটি এর ধরন প্রকাশ করে। প্রথম সেটের ৫টি সংখ্যা পণ্যটির উৎপাদন নম্বর প্রকাশ করে। আর দ্বিতীয় সেটের ৫টি সংখ্যা প্রকাশ করে পণ্যটির বিপনন সংখ্যা। ডানের একেবারে শেষ সংখ্যাটি জানান দেয় ‘চেক ডিজিট’ হিসাবে। যেন কম্পিউটার বুঝতে পারে যে বারকোডটি সঠিকভাবে স্ক্যানার রিড করতে পেরেছে।