টিকটকের মতো গুগল ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন!
টিকটক, এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম। এই অ্যাপটি চীনা সংস্থা বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন। প্রায় ১৫০টি দেশে ১৫০ কোটি ইউজার রয়েছে অ্যাপটির। এছাড়া বিশ্বব্যাপী অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ২৬০ কোটি বার।
কিন্তু বহুল ব্যবহৃত এই টিকটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, এটি ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে তা চীন সরকারের হাতে তুলে দেয়। এই তথ্যপাচারের অভিযোগ তুলে এরইমধ্যে অ্যাপটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ ইউরোপীয় কমিশন।কিছু কিছু গোয়েন্দা সংস্থার উদ্বেগ, অ্যাপটি সরকারি ডিভাইসে ডাউনলোড করলে তাদের সংবেদনশীল তথ্য অন্যের হাতে চলে যেতে পারে। যদিও শুরু থেকেই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীনা টেক সংস্থাটি। তাদের দাবি, অ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য কখনওই অন্য কাউকে দেওয়া হয় না। ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে তারা অন্যান্য সোশাল মিডিয়া কোম্পানির মতো একইভাবে কাজ করে। টিকটকের দাবি, সংস্থাটি অন্যসব প্রতিযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মতই গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে একনিষ্ঠ।
টিকটকের বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ এনে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, অন্যসব অ্যাপভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময় এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।
এর মধ্যে গুগলের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর অবস্থান ট্র্যাকিংয়ের অভিযোগ অন্যতম। এমনকি বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে প্রশ্নের মুখোমুখিও হয়েছে গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই।
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি অঙ্গরাজ্যে ব্যবহারকারীর অবস্থান ট্র্যাকিং সংক্রান্ত মামলায় গুগলের জরিমানা হয় ৩৯২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ সময় গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, ২০১৪ সাল থেকে ব্যবহারকারীর অবস্থান গোপনে ট্র্যাক করছে গুগল, এমনকি ব্যবহারকারী ওই সংক্রান্ত অপশন বন্ধ করলেও গুগল গোপনে অবস্থান ট্র্যাক করে।
গুগলের লোকেশন ট্র্যাক অবৈধ সাব্যস্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে। এ বিষয়ে গুগলকে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বলেছে, লোকেশন ট্র্যাকিং প্রশ্নে গুগলকে অবশ্যই গ্রাহকের কাছে স্বচ্ছ হতে হবে এবং ওয়েব পেজে এ সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিত আকারে জানাতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুগলকে অবস্থান ট্র্যাকিংয়ের জন্য জরিমানা করা হলেও এখন যে গুগল সে কাজটি আর করছে না, এমন নিশ্চিয়তা নেই। কেননা, গুগল এখনও আগের মতোই ম্যাপ ব্যবহার করছে, লোকেশনও আগের মতোই ব্যবহার করছে। যদিও গুগলের দাবি, সংস্থাটি এখন ব্যবহারকারীদের ইনকগনিটো (ছদ্মবেশী) মোডে ম্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দেয়, যা অবস্থানের ডেটা সংরক্ষণ করা থেকে বাধা দেয়। তারপরও বিষয়টি নিশ্চিত নয় যে, গুগল এখন আর অবস্থান ট্র্যাক করছে না।