খুলনাতে পলিটেকনিক/ডিপ্লোমা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট ট্রেনিংHAMKO_Future_Tech_Academy

‘বাংলাদেশে বিজ্ঞানের সম্ভাবনা বেশ ভালো’— বললেন ভারতীয় বিজ্ঞানী পুরুষোত্তম চক্রবর্তী

আয়োজিত হলো ‘পাঠকের মুখোমুখি’ সেমিনার। আজ ১৬ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর সেমিনার কক্ষে আয়োজিত হয় এ আলোচনা সভা। বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন এ আয়োজন করে।

এ আয়োজনের প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিকসের সাবেক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ও পদার্থবিজ্ঞানী পুরুষোত্তম চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, গুগলে কর্মরত প্রবাসী কম্পিউটারবিজ্ঞানী শিবলী ইমতিয়াজ হাসান ও বাংলাদেশ ফিজিকাল সোসাইটির সহসভাপতি ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক এ কে এম আব্দুল হাকিম। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, বিজ্ঞানবক্তা আসিফ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক খলিলুর রহমান, বিকাশের চিফ কমিউনিকেশনস অফিসার মাহফুজ সাদিক, কর্পোরেট কমিউনিকেশনসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রোকসানা মিলি ও বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার ও সহসম্পাদক উচ্ছ্বাস তৌসিফ। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম সূচনা বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের জীবনে বিজ্ঞানের নানাবিধ ব্যবহার আছে। তা হয়তো আমরা সব সময় খেয়াল করি না। কিন্তু খেয়াল না করলেও প্রতিনিয়ত আমরা বিজ্ঞান ব্যবহার করছি। আমাদের উদ্দেশ্য সবার মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনতা তৈরি করা। সবাইকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলা।

পদার্থবিজ্ঞানী পুরুষোত্তম চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে। গত কয়েকদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দিতে গিয়ে দেখেছি এখানকার শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানে বেশ আগ্রহী। আজ এখানে আপনাদের কাছে এসেও আমার মন ভরে গেছে। সব দেখে মনে হল, বাংলাদেশে বিজ্ঞানের সম্ভাবনা বেশ ভালো।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমি ন্যানোপ্রযুক্তি ও ন্যানোগঠন নিয়ে কাজ করছি। ইলেকট্রনিকস ব্যবহার না করে যেন ফোটনিকস ব্যবহার করে কাজ করা যায় অপটিক্যাল সিগন্যাল (আলোক সিগন্যাল) নিয়ন্ত্রণের জন্য, সেটা আমার কাজের লক্ষ্য। এরকম নতুন নতুন লক্ষ্য নিয়ে আপনারাও গবেষণা করবেন। এটাই বিজ্ঞানচর্চার আনন্দ।’

শিবলী ইমতিয়াজ হাসান বলেন, ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার পর উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিই আমি। সেখানে প্রযুক্তি নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা করেছি। এরপর অ্যাপল ও আমাজনে কাজ করেছি। এ সময়ের মধ্যে আমি অনেক উদ্ভাবনের পেটেন্ট করেছি। এ অবস্থায় গুগল টিম ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে কাজ করছিল। আমি তখন নতুন কিছু করার জন্য গুগলে যুক্ত হই। চশমায় একধরনের প্রযুক্তি নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আপনাকে হাতে ফোন চালাতে হবে না, ফোনের স্ক্রিন দেখতে হবে না। চশমাতেই সব দেখা যাবে। অনেকে বিদেশে গিয়ে সেখানকার ভাষা বুঝতে পারে না। এই চশমা তাঁদের সাহায্য করবে গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে। রাস্তায় চলার ক্ষেত্রেও এ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যাবে। ম্যাপ দেখা যাবে চশমাতেই। এ ছাড়াও ভবিষ্যতের প্রযুক্তি কেমন হতে পারে, আমরা সে ধরনের কনসেপ্ট বা নতুন ধারণা উদ্ভাবনের চেষ্টা করি।’

এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, ‘অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনে আমার অভিজ্ঞতা ৪০ বছরের। আমরা যখন শুরুর দিকে কাজ করেছি, তখন এত সুযোগ সুবিধা ছিল না। তবে এখন উন্নত হয়েছে। বিজ্ঞানের জন্য বেশ ভালো বাজেট আছে এখন, সুযোগ আছে। অনেক শিক্ষার্থী এখন বিদেশে না গিয়ে আমাদের এখানে ন্যানোপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে চায়। মানে, দেশে গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে। তবে এটা আরও বাড়াতে হবে।’

খলিলুর রহমান বলেন, ‘শিবলী আমার ছাত্র। ওরা প্রথম রোবট বানায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর নাসার প্রজেক্টেও কাজ করেছে। ওরা প্রথমে তিনটি ছোট্ট রোবট বানিয়ে এনেছিল। সেই থেকে শুরু। শিক্ষার্থীরা দিন রাত খেটে কাজ করতে থাকল। সবাই আনন্দের সঙ্গে কাজ করছিল। পড়ালেখার মধ্যে এই আনন্দটা থাকতে হবে। এখন ওরা তার ফল পাচ্ছে। শিবলী টেক দুনিয়ার সবচেয়ে বড় তিনটি প্রতিষ্ঠানেই কাজ করেছে। ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীরাও চাইলে এমনটা করতে পারবে। এটা দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য বড় অনুপ্রেরণা হতে পারে।’

বিজ্ঞানবক্তা আসিফ বলেন, ‘৩০ বছর আগে আমি দেশে বিজ্ঞান বক্তৃতা দিতে শুরু করেছিলাম। এখন প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রযুক্তির সঙ্গে যান্ত্রিক হয়ে যাওয়া যাবে না। মানবিক হতে হবে।’

সোহরাব হাসান বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে আমাদের দেনন্দিন জীবনের মিল কতটা? আমরা কি একটু বেশি প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে যাচ্ছি? এটা কি আমাদের জন্য ভালো নাকি খারাপ, সেটাও একটু ভেবে দেখতে হবে। বিজ্ঞানকে সামনে রেখে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, সেটা ভাবতে হবে। বিজ্ঞান ছাড়া উন্নতি করা সম্ভব নয়। তাই বিজ্ঞানকে নিয়েই আমাদের পথ চলতে হবে।’

আগ্রহী শিক্ষার্থীর প্রশ্ন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা-গল্প, ছবি তোলা এরকম নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ‘পাঠকের মুখোমুখি’। বিজ্ঞানচিন্তা দেশের কিশোর-তরুণদের বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। এটিও সেরকম একটি আয়োজন। পাঠকদের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ ও আলোচনার সুযোগ করে দিতেই এ আয়োজন করে বিজ্ঞানচিন্তা।

Hamko ICT Ltd. is a Bangladeshi tech company having primarily focused on software development service in home and abroad. HAMKO_ICT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here